আবেগ আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। রাগ, দুঃখ, লজ্জা কিংবা ভয়—এসব অনুভূতি স্বাভাবিক হলেও, যখন তা আমাদের আচরণ ও সিদ্ধান্তকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে, তখনই সমস্যা শুরু হয়।
মনোবিজ্ঞানে এই অবস্থা বোঝাতে “Emotion Regulation” শব্দটি ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ, আবেগকে দমন না করে, বরং চিনে নিয়ে তা স্বাস্থ্যকরভাবে পরিচালনা করা। এই দক্ষতা শুধু মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং সম্পর্ক, ক্যারিয়ার ও জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব ফেলে।
আবেগ নিয়ন্ত্রণের প্রথম ধাপ হলো — নিজের অনুভূতিকে নাম দেওয়া। আপনি রাগান্বিত, না কি অপমানিত বোধ করছেন? যখন আমরা আবেগকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করি, তখন আমাদের মস্তিষ্কের Amygdala শান্ত হয় এবং যুক্তিভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ফিরে আসে। একে মনোবিজ্ঞানীরা বলেন “Name it to tame it”।
পরবর্তী ধাপে আসে চিন্তা পদ্ধতি পুনর্গঠন বা Cognitive Reappraisal। কোনো পরিস্থিতিকে একদৃষ্টিতে না দেখে অন্যভাবে ভাবার চেষ্টা করুন। “সে আমাকে ইচ্ছা করে কষ্ট দিল” — এই চিন্তার বদলে ভাবা যায়: “সে হয়তো নিজের ভেতরে বড় এক যুদ্ধ করছে।” এই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আবেগকে অনেকটাই হালকা করে দিতে পারে।
আবেগ প্রবল হলে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া না দিয়ে pause নেওয়া অত্যন্ত কার্যকর। কয়েক মিনিট নীরব থাকা, গভীর নিঃশ্বাস নেওয়া, বা স্থান পরিবর্তন করাও সেই মুহূর্তে আবেগকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে।
একইসঙ্গে Grounding টেকনিক যেমন ৫-৪-৩-২-১ পদ্ধতি—যার মাধ্যমে আপনি আপনার ইন্দ্রিয় দিয়ে পাঁচটি জিনিস লক্ষ্য করেন—এটি আপনাকে বর্তমান মুহূর্তে ফিরিয়ে আনে ও মস্তিষ্ককে রিসেট করে।